তীব্র যানজট এড়াতে আপনাকে আকাশে উড়াবে যে গাড়ি !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সাধের গাড়িটি নিয়ে আপনি অফিসের দিকে বেরুলেন। রাস্তায় তীব্র যানজট। ব্যস, সেই যে থামলেন তো থামলেনই। সামনে পেছনে কোথাও নড়াচড়ার এক তিল জায়গা নেই। সে মুহূর্তে আপনার মনে হতেই পারে ‘ইস্! গাড়িটা যদি উড়তে পারত তা হলে এভাবে আটকে থাকতে হতো না।’ আর আক্ষেপ নয়, আপনার সে ইচ্ছে পূরণ হতে পারে শিগগিরই। অন্তত তেমনই আশ্বাস দিচ্ছেন স্টেফান ক্লেন।

পেশায় ইঞ্জিনিয়ার এবং ডিজাইনার স্টেফানের দাদা এবং বাবা দু’জনেই দক্ষ বিমানচালক ছিলেন। আকাশে ওড়ার তাগিদ স্টেফান উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছেন। তারপর অবশ্য বিশ্বের নামীদামি গাড়ি নির্মাণ সংস্থার মডেল বানানোকেই পেশা বানিয়েছিলেন স্লোভাকিয়ার এই বাসিন্দা। এর পাশাপাশি চলেছে উড়ন্ত-গাড়ির গবেষণাও। অবশেষে তা সফল হয়েছে বলে দাবি স্টেফানের।

সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে আর পাঁচটা গাড়ি থেকে তার তৈরি ছ’মিটারের গাড়িটির পার্থক্য বোঝা অসম্ভব। তবে বিমানবন্দরের কাছে এলেই স্বমূর্তি ধারণ করবে এটি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ডানা মেলে বিমানের রূপ নেবে। উড়বে আকাশে। স্টেফানের দাবি, আকাশে ওড়ার সময় প্রতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে এর। এক বারে উড়তে পারবে ৭০০ কিলোমিটার অব্দি। কল্পবিজ্ঞানের এমন উড়ুক্কু-গাড়ির প্রথম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। এবার জনসাধারণের জন্য তৈরি করা হবে উড়ন্ত-গাড়ি।

তবে এ ধরনের গাড়ি এ-ই প্রথম নয়। চলতি বছরেই দু’টি মার্কিন এবং ওলন্দাজ সংস্থা এই ধরনের উড়ন্ত গাড়ি বাজারে আনবে বলে খবর বেরিয়েছে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মোটেই পাত্তা দিচ্ছেন না এই নতুন প্রযুক্তিকে। স্লোভাক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির অধ্যাপক জ্যান লেসিনস্কির মতে, ‘এত বেশি জ্বালানি খরচ বিবেচনা করলে মানুষ এতে এমনিতেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তখনই এর জনপ্রিয়তা কমবে।’ তাদের আশঙ্কা মিথ্যে নয়।

স্টেফানের দেয়া তথ্য বলছে, আকাশে ওড়ার সময় প্রতি ঘণ্টায় ১৫ লিটার পেট্রোল পোড়াবে এই গাড়ি। অর্থাৎ পুরো বিষয়টি যে বেশ ব্যয়বহুল হবে তা এখনই স্পষ্ট।  কিন্তু তার মতে, ‘এ গাড়ি অন্তত পরিবহনের বিকল্প মাধ্যম হতেই পারে।’ পাশাপাশি এর চালকদের গাড়ি চালানো এবং অন্তত ২৫ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবেই এই উড়ুক্কুকে বশে আনা সম্ভব হবে। কাজেই যে কেউ চাইলেই এটি চালাতে পারছেন না।
Facebook
Twitter
WhatsApp