লাইফ ডেস্ক : প্রেম-ভালোবাসার কোনো দেশ নেই, জাত নেই, ধর্ম নেই। আমাদের সমাজ এমনিতেই প্রেম-ভালোবাসাকে খুব বেশি সমর্থন দেয় না। তারপর সেই প্রেম-ভালোবাসা যদি জাত, ধর্ম, বর্ণ কোনো কিছু না মেনেই হয় তাহলে তো কোনো কথাই নেই। কিন্তু প্রেম কার সাথে কখন হয়ে যাবে তার কোনো ধরাবাঁধা সময় বা নিয়ম নেই। তাই বলে সমাজের বাইরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে মেনে নিয়েই আমাদের প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানো ভালো। আমাদের সমাজ ও পরিবারে কিছু কিছু প্রেমের সম্পর্ককে কোনো ভাবেই মেনে নিতে চায় না। আসুন
সে রকম কিছু প্রেম-ভালোবাসা সম্পর্ক জেনে আসি।
প্রেমিকা যখন বয়সে বড়:
আজকাল অল্প বয়সী মেয়েদের দেখা যায় মধ্য বয়সী পুরুষদের সাথে প্রেম করে বেড়ায় এবং একসময় তারা বিয়েও করে। তাদের এই প্রেমকে সমাজ খুব বেশি বাঁকা চোখে দেখে না। কিন্তু একটি ছেলে যখন তারচেয়ে কিছুটা বেশি বয়সী মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় তখন তার চারপাশের লোকগুলো ভ্রু কুচকানো শুরু করে। তারা কোনোমতেই এই প্রেমের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে চায় না। ছেলে ও মেয়ে দুজনের চারপাশের মানুষগুলো তাদের এই ভালোবাসার সম্পর্ককে নিয়ে নানাভাবে ঠাট্টা মশকরা করে। পরিবার তো কোনোভাবেই মেনে নেয় তাদের এই ভালোবাসা। সমাজ ও পরিবারের বাঁধার কারণে তাদের দুজনের মধ্যে প্রকৃত ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও মনোকষ্ট নিয়ে দুজন দুজনকে সরে যেতে হয় নয়তোবা সারাজীবন মানুষের নানা কথা শুনতে হয়।
ছেলে ও মেয়ে দুজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলে:
খবরদার। এই ধরনের প্রেমে ভুলে পড়বেন না। আর যাই হোক এই ধরনের প্রেম সমাজ বলেন পরিবার বলেন কেউই মেনে নেয়না। অনেক সময় ছেলে বা মেয়ে ধর্ম পরিবর্তন করে তাদের এই সম্পর্ককে যে কোনো এক সমাজের অনুকূলে নিয়ে আসেন। কিন্তু এর কারণে তাকে ছাড়তে হয় তার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন সবাইকে। এটা তার জন্য অনেক বড় ত্যাগ হয়ে দাঁড়ায়। ভাই ইউরোপ আমেরিকায় এগুলো কোনো বিষয় নয়। তবে আমাদের মধ্যে সংরক্ষণশীল সমাজে এটা অনেক বড় একটা বিষয়। তাই ক্ষণিক আবেগটাকে পাশ কাটিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্তটি একটু বুঝেশুনে নেওয়াই ভালো। নইলে ভবিষ্যতে এটা আপনাদের দুজনের জীবনেই বড় ধরনের বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।
আত্মীয়-আত্মীয় প্রেম:
চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুফাতো ভাই-বোনের মধ্যে আজকাল অনেক প্রেম-ভালোবাসাই গড়ে উঠছে। প্রথম দিকে পরিবার থেকে কিছুটা বাঁধা এলেও একসময় তা ঠিক হলেও হতে পারে। কিন্তু আত্মীয়টি যদি হয় দূর সম্পর্কের মামা, খালা তাহলে খবর আছে। এখানে সম্পর্কটা যত দূরেরই হোক না কোনো সম্বোধনটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই এ ধরনের প্রেম-ভালোবাসা থেকে সাবধান।
অসময়ে প্রেম:
অল্প বয়সের প্রেম যেমন সমাজ ভালো চোখে দেখে না তেমনি মাঝ বয়সের প্রেমকেও সমাজ ভালোভাবে দেখে না। অনেকে আছেন যারা নিজের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকতে থাকতে প্রেম করার ফুসরত পান না। এসব করতে করতে বয়স ৩০ এর কোঠা পেরিয়ে যায়। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার গুছিয়ে যখন একদন্ড ফুসরত পান তখন খোঁজ করেন মনের মানুষটির। তখনই সমাজের কর্তারা বলতে শুরু করে ‘বুড়ো বয়সে ভীমরতি ধরেছে’। ছেলেদের ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রেমে যতটা না সমস্যা হয় তারচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে মেয়েরা।
সাবেক স্ত্রীর সাথে প্রেম:
কোনো এক অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়। কিন্তু তাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসাটা থেকে যায়। সেই ভালোবাসার টানে তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখে, দেখা করে। কিন্তু সমাজ ও পরিবার এই কথাবার্তা ও দেখা করার বিষয়টিকে মেনে নেয় না। এমনকি সামাজিক বিভিন্ন বিচার সালিশেরও সম্মুখীন হতে হয় তাদেরকে।
পরের স্বামী বা স্ত্রীর সাথে প্রেম:
সত্যিই এটি একটি অপরাধ। এর কারণে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই সমাজ এটিকে ভালো চোখে দেখে না। এই প্রেম কখনোই কারো জীবনে সুফল বয়ে নিয়ে আসে না।