ডেস্ক: বিশ্ব হ্যাকারদের হ্যাকিং সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করা হ্যাক মিরর সাইটের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সারা পৃথিবীর ৯১৮টি হ্যাকার টিমের মধ্যে সবার শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস। একই সঙ্গে এই হ্যাকার টিমটি জোন-এইচে পৃথিবীর সেরা ৫০টি টিমের মধ্যে ৩২তম স্থানে উঠে এসেছে। বাংলাদেশের হ্যাকার টিমের মধ্যে দলগতভাবে এ কৃতিত্ব অর্জনের ঘটনা এবারই প্রথম। বাংলাদেশ শীর্ষ স্থানে উঠে আসার আগে ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও তুরস্কের হ্যাকাররা এগিয়ে ছিল। ইন্দোনেশিয়া ছিল প্রথম স্থানে। সম্প্রতি বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া সাইবার যুদ্ধে বাংলাদেশের হ্যাকাররা ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক হামলা চালালে তারা অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। এবং সাইবার যুদ্ধ চলাকালীন সে দেশের সরকারি উদ্যোগে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে পিছু হটে ইন্দোনেশিয়ান হ্যাকাররা। এমন নানান সাফল্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের হ্যাকার টিম এখন বিশ্বের এক নম্বর অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
এদিকে এই হ্যাকার টিমটি সম্প্রতি জোন-এইচে পৃথিবীর সেরা ৫০টি হ্যাকার টিমের মধ্যে ৩২ নম্বর স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। মাত্র দুই বছরের একটু বেশি সময় ধরে হ্যাকিং নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস এই শীর্ষ স্থানে চলে এলো। তবে এককভাবে জোন-এইচে বাংলাদেশের আরেক সেরা হ্যাকার টাইগার ম্যাট এ মুহূর্তে ২০ নম্বর স্থানে অবস্থান করছেন। তিনি এর আগে সপ্তম স্থানে ছিলেন। মূলত অনিয়মিত হ্যাকিংয়ের কারণে তিনি ক্রমশ নিচের দিকে চলে আসছেন। জানা গেছে, ২০১২ সালের ৯ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় হ্যাক মিরর এবং ২০০২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় জোন-এইচ। তুলনামূলক পুরনো সময়ের হ্যাকারদের একক রাজত্বকালে গত ১১ বছর ধরে কিছু হ্যাকার টিম শীর্ষ স্থানে ছিল। তবে এখন হ্যাকারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করার ফলে ক্রমশ তালিকা থেকে কিছু টিম পিছে চলে যাচ্ছে। আর কিছু টিম দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশেরও একটি টিম এগিয়ে চলেছে (বর্তমানে ৩২তম)। আর ঠিক কত দিনে জোন-এইচে পৃথিবীর সেরা হ্যাকারদের সরিয়ে প্রথম স্থানে আসা সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের এডমিন রোটেটিং রটোর বলেন, আমরা এখন যে গতিতে এগুচ্ছি তা নিয়মিত করতে পারলে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে আমরাই হবো পৃথিবীর সেরা এবং শক্তিশালী হ্যাকার টিম। বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের এডমিন রোটেটিং রটোর বলেন, র্যাংকিং এ আমরা এগিয়ে থাকার ফলে সারা বিশ্বের হ্যাকারদের চেয়ে আমাদের হ্যাকাররা যে অনেক দক্ষ তাই প্রমাণিত হলো। যেখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হ্যাকাররা কাজ করেও কোনো অবস্থানেই নেই সেখানে আমরা কোনো সাহায্য না পাওয়া সত্ত্বেও ১ নম্বরে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করেছি। এর ফলে আমাদের দেশের সাইবার স্পেসের ওপর হ্যাকারদের হামলা বলতে গেলে অনেকটাই কমে যাবে।
যদিও বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের প্রক্সিটিম বিশ্বের অনেক দেশেই আছে। যাদের কাজ হলো বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে হামলা হলেই তাদের উপরে পাল্টা হামলা চালানো। জানা গেছে, বিশ্বে হ্যাকারদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সরকারের অনেক ভূমিকা থাকে। দেশের উন্নয়নে তারা সরকারের সঙ্গে এক যোগে কাজ করে। সরকার নানাভাবে তাদের সহায়তা করে। সম্প্রতি রাশিয়া, ইরান, সিরিয়া, আমেরিকা, চীন, যুক্তরাজ্য, কোরিয়ার মতো দেশ এ নিয়ে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। রোটেটিং রটোর বলেন, প্রথমে এটা মনে রাখতে হবে একজন হ্যাকার কখনো খারাপ না। খারাপ হলো ক্র্যাকার। হ্যাকিং করা এক প্রকার দুঃসাধ্য কাজ বটে। প্রযুক্তির ব্যাপারে তুখোড় জ্ঞান না থাকলে কখনোই হ্যাকার হওয়া সম্ভব না।