ভিন্ন খবর, অনলাইন আপডেট : কোটি টাকার রোলস রয়েসে চড়ে অফিসে যাওয়া অনেকের কাছেই স্বাভাবিক হলেও , এমন হাজারো মানুষ আছে যাদের কাছে আকাশকুসুম কল্পনা। কিন্তু রমেশ বাবু পারেন। তিনি পারেন রোলস রয়েসে চেপে সেলুনে যেতে।
ভাবছেন তো, এই রমেশ বাবু কে? শুনলে আরো অবাক হবেন।
বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এই রমেশ বাবু। একেবারে নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা এক ব্যক্তি। রমেশের বাবার সেলুন ছিল। সামান্য আয়েই সংসার চলত। তখন রমেশ বাবু খুব ছোট। তার যখন সাত বছর বয়স, সে সময় হঠাৎই বাবা মারা যান। সালটা ১৯৮৯।
তার পরেই তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়। তার সেলুনে অনেক লোক আসতেন দামি গাড়ি নিয়ে চুল কাটাতে। ছোট্ট ছেলেটির মনে তখন থেকেই শখ জাগে নতুন নতুন গাড়ি কেনার। কিন্তু তখন সেটা তার কাছে আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছু ছিল না। কিন্তু সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল একদিন এই স্বপ্ন সফল করবেই।
তার পরই তার জীবনে একটা মোড় এল যে সব কিছু একেবারে পাল্টে গেল মুহূর্তে। সেলুনে দিন-রাত কাজ করে টাকা-পয়সা জমাতে শুরু করেন রমেশ। স্বপ্ন যে তাকে পূরণ করতেই হবে।
১৯৯১ সালে তিনি তার নিজের স্যালুন, ইনার স্পেস, চালু করেন। শহরের ফ্যাশনদুরস্তদের কাছে তা দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৯৪ সালে তিনি একটি মারুতি ওমনি ভ্যান কিনে ভাড়া দেয়া শুরু করেন।
তার পরের সময়টা যেন পুরো গল্পের মতো।
একটা সময় এল যখন রমেশের হাতে প্রচুর টাকা। এমন কোন গাড়ি নেই তার গাড়িশালে রয়েছে। যত নতুন গাড়ি বেরিয়েছে তথনই কিনেছে সে। আবার সেই গাড়ি ভাড়া খাটিয়ে টাকা উপার্জন করেছেন।
কোনোটার ভাড়া এক হাজার টাকা তো, কোনওটা ৫০ হাজার। রমেশ প্রায় ২০০টা গাড়ির মালিক হয় যান দেখতে দেখতে। তার সংগ্রহে রয়েছে রোলস রয়েস, মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ-এর বেশ কয়েকটি দামি গাড়ি।
আজ সে কোটিপতি নাপিত। প্রতি দিন নিজের তিন কোটির রোলস রয়েসে চড়ে সেলুনে আসেন। কাজ করেন। কোটিপতি হলেও পুরনো শিকড়কে ভোলেননি রমেশ।
সবকিছুর মুলে এটাই ভাবতে পারি ইচ্ছাশক্তি হলো সবচেয়ে বড় শক্তি। মনিষীরা বলে গেছেন, যদি কিছু করার ইচ্ছা থাকে তাহলে অবশ্যই পথ পাবেন, আর যদি না চান তাহলে শুধুই অজুহাত পাবেন।