এবার শ্বেত মর্মর তাজমহলের আদলেই তৈরি হচ্ছে কৃষ্ণ তাজমহল!

ঢাকা : সম্রাট শাহজাহানের অমর কীর্তি আগ্রার তাজমহল। শ্বেত মর্মর পাথরের সমাধিসৌধটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত। স্ত্রীর অকাল মৃত্যুতে শোকাহত শাহজাহান এই সৌধটির মাধ্যমে তার ভালোবাসার প্রমাণ দিয়েছেন।
তবে অনেকেই মনে করেন, শাহজাহান আসলে দুটি তাজমহল নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। সাদা মর্মর পাথরের মহলে থাকবেন তার স্ত্রী। আর যমুনার অপর পাড়ে তিনি নিজের জন্য আরেকটি তাজমহল নির্মাণ করবেন। তবে সেটা হবে কালো পাথরের। এ দুটি মিলে তার প্রেমকাহিনীর চূড়ান্ত হবে।
এই মতের বিরোধিতাকারীরও অভাব নেই। সবচেয়ে বড় কথা, শাহজাহান তার নিজের সমাধির জন্য আরেকটি সমাধি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, এমন কোনো ইঙ্গিত মোগলদের কোনো ইতিহাসে নেই। তাজমহল নির্মাণ শেষ হওয়ার পর আরো প্রায় ১০ বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। এই সময়ে প্রথমটির তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি দ্বিতীয়টির কাজ শেষ করতে পারতেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন- এমন কোনো প্রমাণ নেই।
তবে আগ্রার আই এন খান (৪৬) তার জীবনের দীর্ঘ ৩০টি বছর ইতোমধ্যেই ব্যয় করেছেন, কৃষ্ণ তাজমহলের ক্লু খুঁজতে। এ নিয়ে তিনি একটি বইও লিখেছেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন, কৃষ্ণ তাজমহল নির্মাণের বিষয়টি কেবল মিথই নয়।
তিনি নিশ্চিতভাবে বিষয়টি প্রমাণ করতে না পারলেও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন, তা-ও হয় না। নিজেই কৃষ্ণ তাজমহল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি হবে আড়াই বর্গ মিটারের। আগ্রহীদের অনেক তৃষ্ণা মেটাবে বলে তিনি আশাবাদী। মূলত আবেগের ওপর ভর করেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছেন তিনি।
তিনি জানান, ‘আমি যখন প্রথম তাজ দেখি, আমার মনে হয়েছিল, শাহজাহানের সমাধিস্তম্ভটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তার সমাধিস্তম্ভটি প্রান্তভাগে। আমি বিষয়টা যথাযথভাবে খতিয়ে দেখতে ৫০০ বারেরও বেশি মনুমেন্টটাতে গেছি। স্থাপনার ভেতরে টেপ নেয়ার অনুমতি না থাকায় আমি সুতা নিয়ে গিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, যমুনার অপর পাড়ে মাহতাব বাগেই শাহজাহান কালো তাজ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। মূল পরিকল্পনা করা হয়েছিল, এমন বিষয়টি মাথায় রেখেই। কিন্তু মাহতাব বাগের প্রাকৃতিক অবস্থা তাজমহলের সাথে মিলছিল না।
তিনি জানান, আগ্রার সম্রাজ্ঞী নূরজাহানের বাবা ইতমাদউদ্দৌলাহর সমাধির আলোকে তাজমহলে মমতাজের সমাধি রাখা হয়েছে কেন্দ্রে, শাহজাহানের সমাধিটি একপাশে সরে গেছে।
আই এন খান বলেন, ‘আমি জানি, লোকজন তাজের মিনার, গম্বুজ, সমাধিস্তম্ভ এবং অন্যান্য বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানতে চায়। এ কারণেই আমি এমন একটি যাদুঘর নির্মাণ করতে চাইছি, যা তাদের প্রয়োজন মেটাবে।’
তিনি বলেন, তাজমহল নির্মাণে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, কৃষ্ণ তাজমহলে তিনি সেগুলোই প্রয়োগ করবেন।
হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে।

Facebook
Twitter
WhatsApp