বউ কার–তার মীমাংসার ভার এখন বিচারকের হাতে!

ডেস্ক : থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার টেবিলের দু’পাশে দুই যুবক। দু’জনেই মারমুখি, তেড়িয়া মেজাজে একে অপরকে শাসাচেছন৷ “এ আমার বউ!” দাবি এ পক্ষের৷ ওপক্ষের পাল্টা দাবি, “কিসের তোর বউ? ওর সঙ্গে আগেই বিয়ে হয়েছে আমার৷”
দু’জনের মাঝখানে কাঁচুমাচু মুখে শাড়ি পরা তরুণী৷ বয়স বাইশ-তেইশ৷ উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ৷ সুশ্রী, চটকদার চেহারা৷ দু’পক্ষের মাঝে পড়ে রীতিমতো ভ্যাবাচাকা!ঘরের মধ্যে পিলপিল করছে দু’পক্ষের লোকজন৷ শিরা ফুলিয়ে শ্রাব্য-অশ্রাব্য গালিসঙ্গতে কলহরত৷ ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি, চুলোচুলি– চলছে সেসবও, বিস্তারিত জানিয়েছে সংবাদ প্রতিদিন।
ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানায় শুক্রবার এই বউ-বিবাদের সমাধান খুঁজতে শেষ পর্যন্ত তরুণীকে পুলিশ বসিরহাট আদালতে পাঠান। পরে বিচারক তরুণীকে দু’দিন বাদুড়িয়ার আটুরিয়া হোমে রাখার নির্দেশ দেন৷
এই হুলস্থূল কাণ্ডের মাঝে পড়ে রীতিমতো নাকাল স্বয়ং দারোগাবাবু৷ ভরদুপুরে নিজের চেম্বারে এহেন দক্ষযজ্ঞ থামাতে ক্রমাগত ধমক-টেবিল চাপড়ে চলেছেন৷ কিন্তু সেই ‘মেছোহাট’-এ কে শোনে সে তর্জন-গর্জন! ধাক্কা দিয়ে জনতাকে ঘরের বাইরে পাঠানোর পর উঠোনেই শুরু হল লাথালাথি-ঘুসোঘুসি৷ পরিস্হিতি সামলাতে শেষপর্যন্ত লাঠিচার্জ করে থানা ফাঁকা করতে হল পুলিশকে৷
হাসনাবাদ থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বসিরহাট কলেজের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণীর বাড়ি হাড়োয়ায়৷ গত ১০ অক্টোবর সম্বন্ধ করে তাঁর বিয়ে হয়েছে সন্দেশখালির বাবলু সর্দার নামে এক স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে৷ ২৭ অক্টোবর তরুণী শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়৷ খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বউ রয়েছে হাসনাবাদের রজিপুর গ্রামে আলিম মণ্ডল নামে এক যুবকের বাড়ি৷ সন্দেশখালি থানা বিষয়টি জানায় হাসনাবাদ থানায়৷ এদিন হাসনাবাদ থানার পুলিশ দু’পক্ষকেই ডেকে পাঠায়৷ সেখানেই বাবলু ও আলিম দু’জনেই দাবি করে ওই তরুণী তাঁর স্ত্রী৷ তারপরেই শুরু হয় বচসা-হাতাহাতি৷
বউ কার–তার মীমাংসার ভার এখন বিচারকের হাতে৷ সোমবার শুনানি হবে আদালতে৷

Facebook
Twitter
WhatsApp