জানা-অজানা ডেস্কঃ
রাজধানী ঢাকায় রমজানের সময় অভিজাত রেস্তোঁরাগুলোতে হরেক রকমের ইফতারের আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন বহু মানুষ এসব অভিজাত রেস্তোঁরাগুলোতে যাচ্ছেন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় ঢাকা শহরের রেস্তোঁরাগুলোর অধিকাংশ বাবুর্চি বা শেফই মুসলমান। তাদের অধিকাংশই রোজা রাখেন। তাই খাবার পরখ করে দেখার উপায় থাকে না। তবুও খাবারের চিরাচরিত স্বাদ পরিবর্তন হয় না। কিন্তু কীভাবে? এ বিষয়ে বিবিসি সঙ্গে কথা হয় ঢাকার বিভিন্ন রেস্তোঁরার শেফদের।
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র একটি অভিজাত রেস্টুরেন্ট ‘ক্লাউড বিস্ট্রো’। এখানকার প্রধান শেফ সজিব মোহাম্মদ। তিনি বলছেন, সবসময় খাবারের স্বাদ একই রকম বজায় রাখার জন্য তিনি রেসিপি কার্ড ব্যবহার করেন।
কোন ধরনের খাবারে কী পরিমাণ রান্নার উপাদান ব্যবহার করতে হবে সেটি এই কার্ডে উল্লেখ থাকে। এই রেসিপি কার্ড অনুসরণ করেই শেফরা খাবার তৈরি করেন বলে তিনি জানান।
সজিব মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘কমার্শিয়াল রেস্টুরেন্টগুলো সবসময় এই রেসিপি কার্ড ফলো করে। খাবারটি কিভাবে তৈরি করতে হবে সেটি এই রেসিপি কার্ডে উল্লেখ থাকে। তাই খাবার তৈরি করতে বেশি একটা সমস্যা হয় না’।
রমজানে ইফতারির সময় রেস্তোঁরাগুলোতে তাদের খাবারের তালিকায় বাড়তি অনেক কিছুই যোগ করতে হয়, যেগুলো অন্য সময় থাকে না। এজন্য রেসিপি কার্ডের পাশাপাশি অনেক শেফ তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান।
ঢাকার আরেকটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের শেফ ফারুক হোসেন বলেন, কোন ধরনের খাবারে রান্নার উপকরণ কতটা প্রয়োজন সেটি তারা অনায়াসে আন্দাজ করতে পারেন। সেজন্য মুখে খাবারের স্বাদ পরীক্ষা না করলেও চলে। কিন্তু তারপরেও অন্যকে দিয়ে যাচাই করিয়ে নেওয়া হয়। আশে-পাশে কেউ যদি রোজা না থাকে, তাদেরকে দিয়ে খাবার টেস্ট করিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন রোজা রেখে খাবার তৈরি করলেও স্বাদের তারতম্য নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।
ঢাকার কোন কোন রেস্টুরেন্টে এখন বিভিন্ন ধর্মের লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। রমজানে খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করা তাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়ে ওঠে।
এ বিষয়ে রাজধানী ধানমন্ডির আরেকটি রেস্তোঁরার শেফ লাবলু শেখ বলেন, ‘আমার যতটুকু আইডিয়া আছে, ততটুকু আমি ইউজ (ব্যবহার) করি। আমার যারা কলিগ আছে তাদের দিয়ে আমি টেস্ট করাই। হয়তো বা সে অন্য ধর্মের লোক –খ্রিস্টান বা হিন্দু।’