অনলাইন আপডেট ডেস্ক – এমনটা কখনো শুনতে হবে আপনি হয়তো ভাবেননি আগে। তবে বাস্তবেই এমনটা হচ্ছে জাপানে। তাদের প্রিয় খাবারের তালিকায় পটকা মাছ অন্যতম। জাপানের বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় দেখা যায় এই পটকা মাছ।
জাপানে পটকা মাছের যেকোনো খাবারই জিভে জল এনে দেয়। তবে সামুদ্রিক এই মাছের কিছু অংশ মারাত্মক বিষাক্ত। এ মাছের কারণে বহু মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। তবে তার পরও এটি জাপানিরা খান। সম্প্রতি এ মাছটি নিয়েই বিতর্ক উঠেছে- এটি কি খাদ্যতালিকায় থাকবে নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে এটির রান্না? এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
পটকা মাছটি জাপানে পাফারফিশ নামেও সুপরিচিত। জাপানের জনপ্রিয় একটি খাবার যা উপভোগ করতে জীবন বাজি রাখতে হবে। মাছটি কাঁচা বা ভেজে খাওয়া হয়। এই মাছের অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গে রয়েছে টেট্রোডটোক্সিন নামের এক মারাত্মক বিষাক্ত উপাদান। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৪৪ জন প্রাণ খুইয়েছেন এই মাছ খেয়ে। এর পরও থেমে নেই এই মাছ খাবার প্রথা ।
জাপানি পটকা মাছের সবচেয়ে বিপজ্জনক অংশ হলো এর লিভার। মাছটির লিভারে যে বিষ রয়েছে তা প্রাণঘাতী পটাসিয়াম সায়ানাইডের তুলনায় এক হাজার গুণ বিষাক্ত। আর এ কারণে মাছটির লিভারের সামান্য অংশও যদি মাছটিতে থেকে যায় তাহলে তা বিষাক্ত হয়ে পড়ে এবং মানুষ মারা যায়। এ কারণে মাছটি কোনো সাধারণ লোক কাটতে পারে না। এ মাছ কাটার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকের প্রয়োজন হয়। প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষায় পাস করলে তবেই মেলে মাছ কাটার যোগ্যতার সনদ।
বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে আপনি মৃত্যুমুখেও পড়তে পারেন। আর এ কারণে একমাত্র এ মাছটিই জাপানি সম্রাটদের খাওয়া নিষিদ্ধ। তবে জাপানিরা এ মাছের নির্বিষ প্রজাতি উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন।
বিপজ্জনক হলেও মাছটির সবচেয়ে মজাদার অংশটিও হলো ওই লিভার। সাধারণ পটকা মাছের লিভারে যে বিষ থাকে তা ফার্মে চাষ করা নতুন প্রজাতির পটকা মাছে থাকে না। এ কারণে মাছের লিভারও পরিবেশন করতে চাইছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। তবে এ বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক।
মাছটির মজাদার লিভার মানুষের প্লেটে সরবরাহ করতে হলে আইন কিছুটা শিথিল করতে হবে। আর অনেকেই বলছেন মাছটির লিভার পরিবেশন যদি শুরু হয় তাহলে বিপদ বেড়ে যাবে। কারণ অনেকেই বিষাক্ত পটকা মাছের সঙ্গে নির্বিষ পটকা মাছের পার্থক্য করতে পারবেন না। ফলে এটি খেতে গিয়ে বিপদে পড়তে হবে ভোজনরসিকদের। এ ছাড়া কোনো ফার্মে উভয় প্রজাতির পটকা মাছের মিশ্রণ হয়ে যেতে পারে, যা থেকে মারাত্মক বিষ চলে আসতে পারে মানুষের প্লেটে।
তবে অনেকেই চাইছেন এ মাছটির লিভারও যেন রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়। কারণ জীবন বাজি রেখে হলেও তারা স্বাদ নিতে চান মাছটির।