ইন্টারনেট আসক্তি থেকে বাড়ছে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার ঝুঁকি !

ডেস্ক :তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট ছাড়া জীবন অতিবাহিত করা অসম্ভব। সারা বিশ্বেই কিশোর আর তরুণদের এক বিরাট অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। আর ইন্টারনেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার ফলে তাদের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরণের মনোদৈহিক সমস্যা। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ইন্টারনেট আত্মহত্যা বা নিজের ক্ষতিসাধন করে এরকম কাজ করতে কিশোর-কিশোরীদের একইসাথে উৎসাহিত ও নিরুৎসাহিত করছে।

তবে কিছু গবেষণা বলছে, ইন্টারনেটে বেশ কিছু ফোরাম রয়েছে। এসব ফোরামে ব্যবহারকারী তার বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করতে পারেন, যেখানে অন্য ব্যবহারকারীরা তাদের উত্তর জানান। এর ফলে অনেক সময় বিষণ্ণতায় ভোগা কিশোর-কিশোরীরা জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা লাভ করে ও আত্মহত্যা বা এধরণের পদক্ষেপ থেকে ফিরে আসে। কিন্তু আশঙ্কার কথা এই যে, ইন্টারনেটে কিছু বাজে গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে যারা আত্মহত্যা কিংবা কিভাবে নিজের ক্ষতিসাধন করতে হয় সেই বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে।

বেশ কিছু গবেষণাতে বেশ নিখুঁতভাবে দেখানো হয়েছে যে কিভাবে ইন্টারনেট তরুণ প্রজন্মকে আত্মহত্যা-প্রবণ করে তুলছে। কিন্তু এই গবেষণাগুলোর সংখ্যা এখনো খুব সীমিত। এই কারণে বিজ্ঞানীদের মতে এই বিষয়টি নিয়ে আরো অনেক গবেষণা পরিচালনা করা অত্যন্ত জরুরী। চিকিৎসকরা মনে করে, এধরণের ঝুঁকিতে থাকা কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারে তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতামূলক নজরদারি প্রয়োজন ।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের গবেষক কেট ডেইন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো এধরণের কিশোর-কিশোরীদের অনেক সাহায্য করলেও অনেক ক্ষেত্রে এটি ভাল করার চেয়ে ক্ষতিই বেশি করছে। তার মতে আমাদের জানা উচিত কিভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকা তরুণ প্রজন্মের কাছাকাছি যাওয়া যায়, তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়।

বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ৬০ ভাগের মত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কিশোর-কিশোরী জানিয়েছে তারা ইন্টারনেটে আত্মহত্যা বা এধরণের বিষয়গুলো খুঁজে দেখেছে। এদের মাঝে চারভাগের তিনভাগই আবার আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করেছে ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে!

এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে বাঁচার উপায় কি? বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষতিকারক ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া কোন সমাধান নয়। বরং আমাদের চেষ্টা করা উচিত, ইন্টারনেটের মাধ্যমেই এই বিষণ্ণ কিশোর-কিশোরীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। এছাড়া যারা আত্মহত্যা বা এধরণের ক্ষতিকারক কাজে প্ররোচনা দেয়, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার উপরও গুরত্ব দিয়েছেন গবেষকরা।

Facebook
Twitter
WhatsApp