লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
আপনার শিশুকি চুপচাপ বসে থাকে? কারো সাথে কথা বলেনা? খেতে চায় না? পছন্দের খাবার না হলে টান মেরে ফেলে দেয়? কোনও কিছু ভালো না লাগলে নিজেকে বা আপনাদের আঘাত করার চেষ্টা করে? পড়াশোনাতেও পিছিয়ে পড়ছে? সবার সঙ্গে মেলামেশাও করতে চায় না? সাবধান! আপনার অজান্তেই মানসিক ব্যাধির শিকার হচ্ছে না তো আপনার সন্তান?
সাইকিয়াট্রিস্টরা কিন্তু সেরকমই সাবধান বাণী শোনাচ্ছেন। পাঁচ থেকে ছয় বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ডিপ্রেশন বা গভীর হতাশায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা গত কয়েক বছরে হুহু করে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। দেশের বড় শহরগুলিতেই এই প্রবণতা বেশি।
শুধু ডিপ্রেশন নয়, এর সঙ্গে শিশুদের মধ্যে এমনকি বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও। স্কুলে পড়াশোনার চাপ, ভালো রেজাল্টের জন্য বাবা-মার তাগাদা তো আছেই। তার সঙ্গে স্মার্টফোনের দৌলতে হাতের মুঠোয় খুব তাড়াতাড়ি চলে আসছে বড়দের জগত। হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব।
স্মার্টফোনে গেম খেলা বা নিজে নিজে ভিডিও চালিয়ে দেখা, এখন বছর দুয়েকের বাচ্চার কাছেই জলভাত। ছেলে-মেয়ের কতটা বুদ্ধি, তা নিয়ে অহংকারেরও শেষ নেই বাব-মায়ের। কিন্তু এই স্মার্টফোনে আসক্তিই কেড়ে নিচ্ছে শৈশব।
৫-৬ বছরের বাচ্চার মধ্যে ডিপ্রেশন গত কয়েক বছরের মধ্যে ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা। বাড়ির প্রায় প্রত্যেক সদস্যের কাছেই এখন স্মার্টফোন। তাই একটু বড় হতে না হতেই স্মার্ট-ফোন নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে দেয় বাচ্চারা। ফোন দেখিয়ে কান্না ভোলানো বা খাওয়ানো বাবা-মায়ের কাছেই একটা সহজ উপায়। কিন্তু সেই ‘সহজ উপায়’ যে ভেতরে ভেতরে কত বড় ক্ষতির শিকড় বিস্তার করছে, তা যখন তাঁরা বুঝতে পারছেন, তখন অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যা অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে যে টিভিতে ভায়োলেন্স দেখে আর ভিডিও গেমস খেলে বাচ্চারাও তাদের চারপাশের প্রতি উদাসীন হয়ে যাচ্ছে।
তাদের ঠিক যেটুকু প্রয়োজন, তাতে সামান্য ব্যাঘাত ঘটলেই হিংসাত্মক হয়ে উঠছে তারা। শিশুদের মধ্যে মানসিক সমস্যা চিনে, যত দ্রুত সম্ভব কাউন্সেলিং শুরু করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।