অবাক পৃথিবী ডেস্ক- সাপ চেনেন না পৃথিবীতে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। হাত পা বিহীন এ সরীসৃপটি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে এক ভয়ঙ্কর বিষাক্ত প্রাণী হিসেবে।
তবে মজার ব্যাপার হলো, সব সাপই ভয়ঙ্কর বা বিষাক্ত নয়। বেশির ভাগ সময়ই এরা আত্মরক্ষার্থে আক্রমণ করে। আবার কোনো কোনো সাপ পথচারীদের ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথ খোঁজে। সব সাপ ভয়ঙ্কর না হলেও পৃথিবীতে অন্তত এমন ১০ সাপ আছে যাদের ছোবলে মৃত্যু অনিবার্য। কোনো কোনো সাপের কামড়ে পচে যায় শরীরের মাংস। কোনো কোনো সাপ গিলে খেতে পারে আস্ত মানুষ।
তবে জেনে অবাক হবেন যে, ৩৭ বছর বয়সি মার্কিন নাগরিক টিম ফ্রিডি এর বাস্তব কাহিনি। কারণ, গত ১৬ বছরের মধ্যে তিনি স্বেচ্ছায় শখ করে ১৬০ বার বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন এবং দিব্যি বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর দুই সাপ- টাইপ্যান ও ব্ল্যাক মাম্বার কামড়ও তিনি খেয়েছেন। এই দুটি সাপের কোনো একটি কাউকে কামড়ালে কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হওয়ার কথা। অথচ টিম ফ্রিডির কিছুই হয়নি!
টিম ফ্রিডি পেশায় বিজ্ঞানী। মানুষের কল্যাণে সাপের বিষের ভ্যাকসিন তৈরি করার উদ্দেশ্যে তিনি এ পথে হেঁটেছেন। অর্থাৎ শুধু শখ নয়, শখের পাশাপাশি বিষধর সাপের কামড় খাওয়া তার গবেষণার অংশ।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. ব্রায়ান হানলে টিম ফ্রিডিকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, তার শরীরে এখন অ্যান্টিবডির সংখ্যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণ। নিজের হাতে সাপের কামড় খাওয়ার এই গবেষণার কারণে ২০ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করে গত বছর ফ্রিডিকে ছেড়ে গেছেন তার স্ত্রী। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে তার স্ত্রী অনেকবার নিষেধ করেছেন কিন্তু ফ্রিডি শোনেননি। ফলাফল বিচ্ছেদ।
সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির মহান কাজ করে চলেছেন এই বিজ্ঞানী। সুতরাং সাপের ভয় এক পাশে সরিয়ে রেখে মানবতার বৃহত্তর কল্যাণের জন্য এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে ধন্যবাদ জানানো যেতেই পারে। পরিশেষে বলে রাখি, সাপ থেকে সাবধান!
দেখুন সাপের কামড় খাওয়ার সেই ভিডিও-