চিত্র বিচিত্র ডেস্কঃ
মুরগি মানে সাদা, খয়েরি, লালচে, কালো ছোপ ছোপ অথবা হলদেটে রংয়ের। কিন্তু আয়াম সেমানি একেবারে কালো মুরগি। এর গোটা শরীর কালো! মেঘ কালো, আঁধার কালো, কৃষ্ণ কালো, আর মুরগি কালো হতে পারে না! এ পৃথিবীর ইন্দোনেশিয়াতেই পাওয়া যায় এই আয়াম সেমানি মুরগিকে।
এর গায়ের সব কিছু রং কালো। গায়ের পালক কালো। চামড়া কালো। ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, মুখ, জিভ, এমনকি শরীরের ভিতরের মাংস, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি হাড় পার্যন্ত কালো! কালো বলে কালো? একেবারে কুঁচকুচে কালো। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগি অনেক ধার্মিক কারণেও ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীকালে হল্যান্ড এবং চেক প্রজাতন্ত্র আর স্লোভাকিয়াতেও এই ধরনের মুরগির জন্ম দেওয়া হচ্ছে হাইব্রিড করে। ভারতের মধ্য প্রদেশেও এর হাইব্রিড করা হয়। সেখানে নাম করকনাথ চিকেন।
এই আয়াম সেমানি ডিম দেয় কী রংয়ের আর রক্তের রংটাই বা কী? তাই তো? না, রক্তটা লাল। তবে, সেটাও বেশ গাঢ় লাল। কালচে লাল বা খয়েরি ধাঁচের বলতে পারেন। আর ডিমগুলো বেশ কালো ধরনের। তবে, বাদামি ধাঁচের। আসলে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় ভাষায় আয়াম শব্দের অর্থ হলো মুরগি। আর সেমানি শব্দের অর্থ হলো কালো। ইন্দোনেশিয়ার জাভায় পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, আয়াম সেমানিরা এই পৃথিবীতে অন্তত ৯০০ বছর আগে থেকে রয়েছে। অনেক অনেক গল্প এই মুরগিকে নিয়ে। সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করে এই মুরগি সৌভাগ্য এনে দেয় জীবনে। আয়াম সেমানির মাংসতে এত বেশি আয়রন থাকে, যা অন্য কোনো মাংসে নাকি থাকে না। গর্ভবতী নারীরা এই মুরগির মাংস খেলে, তাঁর শরীর ভালো থাকে। সুস্থভাবে সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। এবং তাতে তাঁদের সন্তানও বুদ্ধিমান ও শক্তিমান হয়!
আয়াম সেমানি হলো সেই মুরগি যা সম্ভাবত বিশ্বের সবথেকে দামি মুরগি! হ্যাঁ, আমেরিকাতে আজ থেকে ১৫ বছর আগেও সচরাচর কোথাও এই মুরগি একটি পাওয়া গেলে, তার দাম নিদেনপক্ষে হতো আড়াই হাজার ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ লাখ এর মতো।
কালোবাজারে তো কখনও কখনও এর দাম প্রায় তিন লাখ টাকাও উঠে যায়! আজকের দিনে এক-একটা মুরগির দামও তিন লাখ টাকা! এরপর কাউকে মুরগি বলার আগে একবার ভেবে নেবেন। না হলে আয়াম সেমানি আপনার দিকে হয়ত কালো দাঁত দেখিয়েই বিকট হাসবে।