চিত্র বিচিত্র ডেস্কঃ
দিন কয়েক আগেই নতুন জীবন পেয়েছিলেন। কারণ, মাত্র এক সপ্তাহ আগে দুবাইয়ে এমিরেটসের যে বিমানটিতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে, সেই বিমানের যাত্রী ছিলেন কেরলের বাসিন্দা মহম্মদ বশির আবদুল খাদার। বিমানে থাকা প্রায় ৩০০ যাত্রীর মতো সেদিন খাদারও আশ্চর্য্জনকভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন।
সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই খাদার প্রমাণ করলেন, ওই যাত্রীদের মধ্যে সবথেকে সৌভাগ্যবান ছিলেন তিনিই। কারণ, সেদিন প্রাণে না বাঁচলে এত বড় চমক আসতই না খাদারের জীবনে। বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই দুবাইয়ে লটারিতে দশ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার জিতেছেন ৬২ বছর বয়সি এই ভারতীয়।
দুবাইতে এক গাড়ি ডিলারের সংস্থায় চাকরি করেন খাদার। সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, ইদে বাড়ি আসার সময়ে দুবাই বিমানবন্দর থেকে এই লটারির টিকিটটি কিনেছিলেন তিনি। প্রত্যেকবারই বাড়ি ফেরার সময়ে লটারির টিকিট কাটাটা তাঁর অভ্যাস ছিল। কোনওবারই পুরস্কার পাননি। আর এবছর ছুটি কাটিয়ে দুবাই ফেরার সময়ে এমিরেটসের ওই অভিশপ্ত বিমানে চেপেছিলেন খাদার। দুবাই বিমানবন্দরে জ্বলন্ত বিমান থেকে কোনওক্রমে বেরিয়ে এসে ভেবেছিলেন, আল্লাহ তাঁকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহ যে তাঁর সৌভাগ্যের ঝুলিতে আরও উপহার মজুত করে রেখেছিলেন, তা সম্ভবত ভাবতে পারেননি এই প্রৌঢ়।
তাই প্রাণে বাঁচার ছ’দিনের মাথায় তিনি জানতে পারেন, এ বছর বাড়ি ফেরার আগে যে টিকিটটি কেটেছিলেন, লটারিতে সেটাই জিতেছে। যে টিকিটের পুরস্কারমূল্য দশ লক্ষ্ মার্কিন ডলার।
এই নিয়ে ১৭ বার লটারির টিকিট কেটেছিলেন এই ভারতীয়। আগে এতবার চেষ্টা করেও লটারির টিকিট কেটে কোনওদিন পুরস্কার পাননি। তার উপরে আর মাত্র চার মাস পরেই চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল খাদারের। এবারে তাই লটারি লাগার আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আল্লাহ যে একটু অন্যরকম ভেবেছিলেন।
লটারি জেতার পরে খাদার তাই বলেছেন, ‘৩৭ বছর ধরে আমি দুবাইতে কাজ করছি। সবসময়ে নিজের দেশে আছি বলেই মনে হয় আমার। আমি বরাবর সাধারণ জীবনযাপন করেছি। আর কয়েকদিন বাদেই অবসর নেব। বিমান দুর্ঘটনার পরে প্রাণে বাঁচিয়ে আমায় দ্বিতীয় জীবন দেওয়ার পরে আল্লাহ আমার হাতে এই অর্থ তুলে দিয়েছেন, যাতে আমি মানুষের উপকারে ভাল কিছু করতে পারি।’ খাদারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, অবসরের পরে দেশে ফিরে এমন কোনও কাজ করা, যাতে মানুষের উপকার করা যায়। তা ছাড়াও, কেরলের যে শিশুদের আর্থিক এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য প্রয়োজন, তাদেরকেও সাহায্য করতে চান খাদার। ভারতীয় টাকায় খাদার মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বেতন পান। কিন্তু তাঁর ২১ বছর বয়সি পঙ্গু ছেলের চিকিৎসার জন্য তাঁকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। জন্মের ১৩ দিন পরেই পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছিল তাঁর ছেলে।