বিয়ের আসরে গল্প করার ছলেই বেরিয়ে এলো আসল সত্য, অবশেষে ভেঙেই গেল বিয়ে!

চিত্র বিচিত্র ডেস্ক, অনলাইন আপডেট: বড় আশা নিয়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাবা। হবু জামাই হিসেবে পছন্দ করে রেখেছিলেন সুরাটের একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক যুবককে। কিন্তু বিয়ের আসরে বরযাত্রীরা এসে নেশার ঘোরে এমন সত্য উদ্ঘাটিত করলেন, যার জেরে বিয়েই ভেঙে গেল। উত্তর প্রদেশের জৌনপুরের ঘটনা।

একটি সর্বভারতীয় হিন্দি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, জৌনপুরের সরপতাহ এলাকার বাসিন্দা রাজেশ প্রতাপ সিংহ নিজের মেয়ের বিয়ে স্থির করেছিলেন ফৈজাবাদের দর্শননগর-নিবাসী সুরেন্দ্র প্রতাপ সিংহের ছেলে সত্যম সিংহের সঙ্গে। ২৩ এপ্রিল বিয়ের দিন স্থির হয়েছিল। বেশ ধূমধাম করেই মেয়ের বিয়ের বন্দোবস্ত করেছিলেন রাজেশ। ২৩ তারিখ পাত্র-সহ বরযাত্রী আড়ম্বর সহকারে বিয়ের আসরে এসে পৌঁছয় যথা সময়ে। পাত্র বিয়ের আসরে বসার আগেই বরযাত্রীরা মদ্যপান শুরু করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাহ্যজ্ঞান লোপ পায় তাঁদের। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব শুরু করেন তাঁরা।

সেই গল্পের সূত্রেই খুলে যায় পাত্রের মুখোশ। পাত্রী পক্ষের কানে আসে, বরযাত্রীরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছেন, সত্যম দিব্যি আছে কিন্তু, প্রথমে লাভ ম্যারেজ করল, এখন আবার অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ করতে চলেছে। কথাটা শুনে খটকা লাগে পাত্রীপক্ষের। এর পর বরযাত্রীদের চেপে ধরতেই উদ্ঘাটিত হয় আসল সত্য। জানা যায়, এটা সত্যমের দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে আরও এক বার বিয়ে করেছিল সে। বিয়ে মাথায় ওঠে। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। সত্যমকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন রাজেশ প্রতাপ সিংহ। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত শুরু করে।

এরপর গত ২৪ তারিখ সন্ধ্যাবেলা সরপতাহ-এ পঞ্চায়েত বসে দুই পক্ষের মীমাংসার লক্ষ্যে। সেখানে পাত্রীপক্ষের সামনেই সত্যম স্বীকার করে নেন যে, তিনি আগে এক বার বিয়ে করেছিলেন। সেই সত্য গোপন করেই দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে চলেছিলেন তিনি। এ হেন স্বীকারোক্তির পরে পঞ্চায়েত রায় দেয়, ক্যাশ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মিলিয়ে যে ১০-১২ লাখ টাকা পণ বাবদ নিয়েছে পাত্রপক্ষ, তার সবটাই পাত্রীপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এর পর ২৫ এপ্রিল শাহগঞ্জ থানার পুলিশ, তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছে। এই বিষয়ে শাহগঞ্জ এলাকার সার্কেল অফিসার রাম ভবন যাদব সংবাদমাধ্যমকে জানান, সুরাটে যে কোম্পানিতে কাজ করেন সত্যম, সেখানকারই এক মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে তিনি প্রণয়বিবাহ সেরেছেন।

বিষয়টি তিনি নিজের পরিবারের কাছেও গোপন রেখেছিলেন। বিস্তারিত তদন্তের জন্য সত্যমের প্রথম স্ত্রীকেও জেরা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ও দিকে রাজেশ প্রতাপ এবং তাঁর কন্যা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু তাঁরা মনে করছেন, যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজেশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মেয়ের বিয়ে ভেঙে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিয়েটা হলে আমার মেয়ে এবং সত্যমের প্রথম স্ত্রী- দু’জনের জীবনই বরবাদ হতো। আমার মেয়ের জন্য আরও ভাল ছেলে পাব, সে নিয়ে আমার কোনও চিন্তা নেই।’

Facebook
Twitter
WhatsApp