চোখের পলকেই একটি ছাগল খেয়ে ফেললো গুইসাপ!(ভিডিও)


চিত্র বিচিত্র ডেস্কঃ

বড় আকারের টিকটিকির মত দেখতে প্রাণীটি হচ্ছে গুইসাপ ।অনেকের কাছে এরা গোসাপ নামেও পরিচিত । Monitor Lizard  বা গুইসাপ কর্ডাটা পর্বের প্রাণী,যার বৈজ্ঞানিক নাম  Varanus ।

দেহ কাঠামোগত দিক দিয়ে সাপের সাথে কোন সাদৃশ্য না থাকলে রয়েছে সাপের মত দ্বিখণ্ডিত জিহ্বা। সাধারণত উভচর এবং সরীসৃপ প্রাণীদের মতই এরাও বুকে ভর দিয়ে স্থলে আবার জলেও বিচরণ করে। এদের গায়ের ত্বক খসখসে হয়ে থাকে।দেখতে ধূসর বাদামী বা কালো রংয়ের ।

সাধারণত হাঁস, মুরগির ডিম-বাচ্চা ,ছোট পাখি, পোকামাকড় এদের খাবারের মূল উৎস । কচুরিপানা বা ঝোপঝাড়-জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে থাকে গুইসাপ। সুযোগ পেলেই বাড়ীর আঙ্গিনায় গিয়ে নিমিষেই মুরগির ডিম ও বাচ্চা নিয়ে দেয় ছুট। তবে গৃহস্থালীর প্রভূভুক্ত কুকুরের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া এত সহজ নয়,অনেক সময় প্রাণ ও হারাতে হয় কুকুরের আক্রমণে। যেন কুকুর তার প্রতিটি আঘাতে এই কথাটি  বলে দেয়, “এত সহজ নয় বাড়ীর হাস-মুরগি নিয়ে পালিয়ে যাওয়া” । আবার গ্রামের অনেকের রয়েছে গুইসাপ মারার অভিজ্ঞতা। খুব সাধারণ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সহযেই আঘাত করা যায় এদের।হয়ত কেউ মারা যায় আবার কেউ পালাতে সক্ষম হয় প্রাণ নিয়ে। মাঝে মাঝে আবার গুইসাপ ধরার জন্য জালও পাতা হত। কিছু কিছু আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে বিশেষ খাদ্য হিসেবে এরা খুব জনপ্রিয়।

মাটির গর্তে,উইপোকাড় ডিবিতে,গাছের ফাটলে এরা বাস করে। জলে, স্থলে ,গাছে  সর্বত্র রয়েছে এদের বিচরণ।বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকোড় খেয়ে গুইসাপ আমাদের পরিবেশ ও ফসলের উপকার করে।

কিন্তু এই প্রাণীটি আজ বিলুপ্তির পথে। জঙ্গল কেটে ফেলে উজাড় করা,কৃষি জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে পানিতে বিষক্রিয়া প্রভৃতি কারনে গুইসাপের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। গুইসাপ প্রাকৃতিক ভাবেই ফসলের পোকামাকড় খেয়ে ফসল রক্ষা করত অথচ আজ নানা রকম কীটনাশক ব্যাবহার করার ফলে এক দিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অপরদিকে এই পরিবেশ বান্ধব প্রাণীটিও আজ বিপর্যয়ের সম্মুখীন।

গুইসাপ ছাড়াও বাংলাদেশে রয়েছে আরো অনেক সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী । যেমন টিকটিকি,কচ্ছপ,আচিল,সাপ,মেঠো কুমির,লোনা কুমির।এদের সংখ্যাও হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। হয়ত এদের জীবনধারা,বৈশিষ্ট্য,চলাফেরা সব কিছু একসময় গল্পে পরিণত হবে। যা আমাদের পরিবেশের জন্য কখনোই সুখকর  বিষয় নয়।

Facebook
Twitter
WhatsApp