ক্যান্সার টিউমার সন্দেহ, অতঃপর রোগীর পেটে পাওয়া গেলো ৪০টি ব্লেড!

(সিএনএন এ প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে) নিশীতা মিতু, লাইফস্টাইল ফিচার এডিটর, অনলাইন আপডেট। যদি জানতে চাই কোন খাবারের স্বাদ আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে, তাহলে নিশ্চয়ই আপনার প্রিয় খাবারের নাম বলবেন। যদি কেউ বলে তার ব্লেডের স্বাদ ভালো লাগে তাহলে তাকে পাগল ছাড়া আর কি ই বা বলবেন আপনি!

শুনে অবাক হবেন, ভারতের একজন পুলিশের ব্লেডের স্বাদই ভালো লাগে। আর এই ভালো লাগার কারনে তিনি ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ ব্লেড বেশ কয়েকটা গিলেও ফেলেছেন! তবে চলুন অদ্ভুত এই ঘটনার বিস্তারিত জানা যাক।

সপ্তাহ দুয়েক আগে সুরজিত সিং হাসপাতালে আসেন কারন তার পেটে ব্যাথা অনুভব করেন। ভারতের উত্তর প্রদেশে থাকা ৪২ বছর বয়সী এই পুলিশ ব্যাক্তি পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে আসলে, ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবে ধারণা করে নেন তার ক্যান্সার হয়েছে এবং পেটে বেশ বড় ক্যান্সারের টিউমার রয়েছে। কিন্তু সার্জারি শেষে তারা প্রায় সকলেই অবাক হয়ে হয়ে যান। কেননা, রোগীর পেট থেকে টিউমার নয় বরং ৪০টি ছুরি বা ব্লেড ও ফোল্ডিং ব্লেড বেরিয়ে আসে!

সুরজিত সিং স্বীকার করেন যে, তার ব্লেড বা ছুরির স্বাদ ভালো লাগতো আর তাই তিনি এগুলো গিলে খেয়ে ফেলেছিলেন। তবে তিনি বলেন তিনি ২৮টি ছুরি খেয়েছেন যেখানে ডাক্তারা আরো ১২টি বেশি উদ্ধার করেছে।

ডাক্তার জতিন্ধর মালহোত্রা যিনি প্রায় ৫ ঘন্টার সফল অপারেশন শেষে যিনি রোগীর পেট থেকে ৪০টি ছুরি উদ্ধার করেন, তিনি বলেন এমনটা তিনি পুর্বে কখনোই দেখেননি। বর্তমানে ছুরি অপারেশন শেষে দুই সন্তানের জনক এই পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ছুরিগুলো তার পেটের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি করেছে যার কারনে সুস্থ হতে তার আরো আরো কিছুদিন সময় লাগবে।

নিজের সম্পর্কে সুরজিত সিং সিএনএন কে বলেন, ‘আমি জানিনা, ঠিক কি কারনে আমি ছুরি গিলতাম। তবে ব্লেড বা ছুরির স্বাদ আমার ভালো লাগতো আর এর উপর আসক্ত ছিলাম। যেমনটা মানুষ সিগারেট বা মাদকের প্রতি আসক্ত থাকে’।

সুরজিত নিজের কাজের জন্য পরিবারের নিকট ক্ষমা চায় এবং ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানায় তাকে নতুন জীবন দানের জন্য।

উল্লেখ্য, ব্লেড বা ছুরি খাওয়ার এই নেশার প্রতি সুরজিত দুই মাস আগে আসক্ত হয়ে পড়েন এবং তা তার পরিবারের কাছে লুকনো ছিলো। তিনি দাবী করেন, এই ব্লেড খাওয়ার পেছনে আধ্যাত্মিক কোন কারন ছিলো। যেই আধ্যাত্মিক ক্ষমতার বলে তিনি ব্লেড খেতেন।

ডাক্তার মালহোত্রা বলেন, ‘আমার ২০ বছরের কর্মজীবনে আমি এমনটা কখনো দেখিনি যে একজন ব্যাক্তি একটি নয় বরং ৪০টি ব্লেড খেয়ে ফেলেছে। সে এক গ্লাস পানি দিয়ে একটি ব্লেড বা ছুরি গিলে ফেলতো’।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বেশ ভয়ে ছিলাম। কারন, আমাদের ছোট্ট একটি ভুল রোগীর মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি কেন এমন অদ্ভুত একটি কাজ করতেন তার কারন আসলেই অজানা’।

বর্তমানে তাকে মানসিক সুস্থতার জন্য হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ডাক্তারা বলছেন, আমরা এই নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা যে তিনি এই কাজ আর করবেন না। তবে, সুরজিত নিজের কাজের জন্য বেশ অনুতপ্ত এবং তিনি বলেন এই কাজ তিনি আর কখনো করবেন না।

Facebook
Twitter
WhatsApp