ভিন্ন খবর ফিচার, অনলাইন আপডেট:
নানা সময়ে কাউকে ব্যর্থ হতে দেখলে আমরা বরাবরই উদাহারন হিসেবে রাজা রবার্টক্রসের নাম টেনে আনি। একে একে ৭ বার ট্রয় আক্রমন করে প্রতিবার ব্যর্থ হয়ে একেবারে মুষড়ে পড়া রবার্ট এক গুহায় লুকিয়ে থাকার সময় একটি মাকড়সার কাছে থেকে অনুপ্রানিত হয়েছিলেন। এরপর নতুন উদ্যমে ট্রয় আক্রমন করে জয় করেছিলেন । সেতো অনেকদিন আগের কথা এবার বুঝি সেই উদাহারনের দিন শেষ হলো । এক অদম্যপ্রান
এ যুগের রবার্ট ক্রস হতে পারেন ভারতীয় এক নাগরিক । সেই ১৯৬৯ সালে শুরু করেছিলেন পরীক্ষা দিতে। প্রতিবছরই পরীক্ষায় বসেন, আর প্রতিবারই ফেল! এই নিয়ে ৪৭ বার হয়ে গেল, তবুও ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করা হলো না তাঁর।
আর ম্যাট্রিক পাশ করতে পারছেন না বলে বিয়েও করতে পারছেন না তিনি। ছোটবেলায় সেরকমই প্রতিজ্ঞা করে বসে রয়েছেন তিনি। অবাক করা এই ছাত্রের নাম শিউচরণ, বয়স ৮২। থাকেন ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজস্থানের এক গ্রামে।
দু’দিন আগে রাজস্থান মধ্য শিক্ষা পর্ষদের দশম শ্রেণীর পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। তাতে দেখা গেছে শিউচরণ সব বিষয়েই ফেল করেছেন। কয়েকটা বিষয়ে আবার শূন্যও পেয়েছেন।
২০১৫সালে শুধু সমাজবিজ্ঞানে পাশ করতে পেরেছিলেন তিনি। আর ২০১৪ সালেও সব বিষয়ে ফেল করেছেন। সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন শিউচরণ জানান, ১৯৯৫ সালে প্রায় পাশ করেই ফেলেছিলাম। কিন্তু অঙ্কে ফেল করে গিয়েছিলাম।
কোহারি গ্রামের একটা মন্দিরেই থাকেন শিউচরণ। বয়সের কারণে চোখেও ভাল দেখতে পান না। রোজগার বলতে আছে সরকারী বৃদ্ধ-ভাতা।
গ্রামের স্কুল শিক্ষকদের কাছ থেকে পড়া দেখিয়ে নেন তিনি।
অনেকেই মজা করে তাঁকে নিয়ে, তবে গ্রামের অন্য অনেকে আবার ম্যাট্রিক পাশ করার জন্য তাঁর এই উদ্যমকে শ্রদ্ধাও করে- বই, খাতা, কলম দিয়ে সাহায্যও করে কেউ কেউ। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র নন শিউচরণ।
জানিয়েছেন, পরের বছর আবারও পরীক্ষায় বসবেন তিনি।
যতক্ষণ বেঁচে থাকবো, পরীক্ষা দিয়ে যাব। পাশ করাটা বড় ব্যাপার না, কিন্তু ম্যাট্রিক পাশ না হলে তো বিয়ে করতে পারছি না – ছোটবেলায় করা প্রতিজ্ঞার কথা মনে করিয়েছেন শিউচরণ।