সম্পাদনা, আজিজুলহাকিম বাদলঃ
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আঁধার আমাদের মাতৃভূমি রূপসী বাংলা । রূপের অপার সৌন্দর্যের সাঁজে সেজে আছে বাংলা মা । আমরা সৌন্দর্যের খোঁজে ছুটে বেড়াই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি আমাদের দেশের সৌন্দর্য তাদের চেয়ে কোন অংশে কম নয় । আমরা বিভিন্ন দেশের গ্রীন ভ্যালী দেখতে যাই কিন্তু ঢাকা থেকে মাত্র ৭/৮ ঘণ্টা গাড়ি পথে পার্বত্য অঞ্চলের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালী টা আমরা কজনই বা দেখেছি । হাতে দুই দিন সময় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন এ সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য, যা আপনার সুন্দর একটি স্মৃতি হয়ে কল্পনায় গেঁথে থাকবে ।
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত । সাজেক হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন । যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল । সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যাতায়াতে সুবিধার কারণে পর্যটকরা খাগড়াছড়ি জেলা দিয়েই সাজেকে আসা যাওয়া করে ।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেক এর দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার । সাজেকে প্রবেশের আগেই পড়বে সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট । এর প্রবীণ জনগোষ্ঠী লুসাই । এছাড়া পাংকুয়া ও ত্রিপুরারাও বাস করে । ১৮৮৫ সালে এই পাড়া প্রতিষ্ঠিত হয় । এর হেড ম্যান লাল থাংগা লুসাই । রুইলুই পাড়া থেকে অল্প সময়ে পৌঁছে যাবেন সাজেক ।
সাজেকের বিজিবি ক্যাম্প বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উঁচুতে অবস্হিত বিজিবি ক্যাম্প । এখানে হেলিপ্যাড আছে । সাজেকের শেষ গ্রাম কংলক পাড়া । এটিও লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত পাড়া । এর হেড ম্যান চৌমিংথাই লুসাই । কংলক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় । সাজেক বিজিবি ক্যাম্প এর পর আর কোন ক্যাম্প না থাকায় নিরাপত্তা জনিত কারনে কংলক পাড়ায় মাঝে মাঝে যাওয়ার অনুমতি দেয় না
কিভাবে যাবেন
এক নজরে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাবার রুট…
খাগড়াছড়ি – দিঘীনালা – বাঘাইহাট – কাসলং – মাসালং – সাজেক। খাগড়াছড়ি থেকে মাসালং পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিঃমিঃ রাস্তা ভাল। কিন্তু মাসালং থেকে সাজেক পর্যন্ত ১৭ কিঃমিঃ রাস্তা খুবই খারাপ। রাস্তা পাকা করার কাজ করছে আর্মিদের একটা দল, ইসিবি-১৯। রাস্তার কাজ চলছে বলেই এখন রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। রিস্ক নিয়ে অনেকেই মাইক্রেবাসে নিয়ে সাজেকে যায় বটে, তবে ফোর হুইল ড্রাইভ ভাল কন্ডিশনের গাড়ী ছাড়া এই চড়াই-উৎরাই ভাঙ্গা রাস্তা পার হওয়া খুবই কষ্টকর। বরং মাসালং থেকে চাঁদের গাড়ী ভাড়া নেয়া যেতে পারে। ভাড়া প্রতিদিনের জন্য ২০০০ টাকা। সাজেকে পৌঁছানোর আগে পাঁচ কিঃমিঃ রাস্তা আপনাকে একটানা শুধু উপরের দিকে উঠতে হবে। সাজেক যাওয়ার পথে বাঘাইহাট জোনে আপনার নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর এট্রি করতে হবে ।
হাতে সময় থাকলে ঢাকা থেকে একটানা সাজেক পর্যন্ত না যাওয়াই ভাল। র্সূযাস্তের আগে পৌছাতে না পারলে আর সামনের দিকে এগুতে পারবেননা। সেক্ষেত্রে খাগড়াছড়িতে রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে সাজেক রওনা হওয়া বেটার।
যেখানে থাকবেন
সাজেক এলাকায় থাকার জায়গা নেই। তাই রাতে থাকার জায়গা আগে থেকেই ঠিক করতে হবে। দল বড় হলে প্রস্তুতি নিতে হবে আগে থেকেই।
থাকার জন্য আছে, রূনময় রির্সোট (বিজিবি পরিচালিত), সাজেক রির্সোট (সেনাবাহিনী পরিচালিত) আলোর রির্সোট এবং ক্লাব হাউস।
সাজেকবাসীদের পরিচালিত কয়েকটি দোকানে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে সেক্ষেত্রে আগেই তাদের জানাতে হবে।
সুত্রঃব্লগ