ডেস্ক রিপোর্ট : জঙ্গিরা যাতে প্রচার-প্রচারণা চালাতে না পারে, সেজন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ। কর্তৃপক্ষ বলছে, জঙ্গিরা তরুণদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলা তাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তরুণদের জঙ্গি দলে ভেড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা এতে বোঝা গেছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘জঙ্গিদের দলে ভেড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উর্বর ভূমি। আক্রমণটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। জঙ্গিরা তরুণদের এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে আকর্ষণ করছে।’
গত ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার দায় স্বীকারকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে তরুণদের দলে ভেড়াচ্ছে।
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিটিআরসি ইউটিউবকে জসিম উদ্দিন রহমানীর ভিডিওসহ জঙ্গিদের প্রচার সংক্রান্ত ভিডিও সরাতে নির্দেশ দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনায় জসিম উদ্দিন রহমানীকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।
গুলশান হামলার ঘটনায় যেসব জঙ্গিদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের অধিকাংশ তরুণ, প্রযুক্তিতে আসক্ত ও ধনী পরিবারের সন্তান হওয়ায় সহজেই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পেরেছে। এর মধ্যে জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের বাবার দাবি, তার ২২ বছর বয়সি ছেলেকে অনলাইন ব্যবহার করে দলে ভেড়ানো হয়েছে।
রোহান গত বছরে ফেসবুক ব্যবহার করে সব মুসলমানকে সন্ত্রাসী হওয়ার আহ্বান জানায় এবং এতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ ভারতের এক প্রচারকের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে।
রোহানের বাবা ইমতিয়াজ খান বুলবুল এএফপিকে বলেন, ‘আর সবার মতোই সাধারণ মুসলমান ছিল তার ছেলে। হয়তো ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। সে কী কী ব্রাউজ করে তা কখনো পরীক্ষা করে দেখিনি। কেউ তার ব্রেনওয়াশ করেছে।’
গত বুধবার জঙ্গিদের প্রকাশ করা ভিডিও অনলাইনে শেয়ারের ওপর সতর্কতা জারি করে পুলিশ জানায় , ”ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যমে আইএস, উগ্রপন্থী কিংবা জঙ্গিবাদ সমর্থনে কোনো ধরনের ভিডিও, ছবি, কোনো বার্তা আপলোড, শেয়ার, কমেন্ট অথবা লাইক দেওয়া তথ্য প্রযুক্তি আইনে (আইসিটি) দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে” ।
ডিআইজি এ কে এম শাহিদুর রহমান বলেন, ‘আইএস বা জঙ্গিদের সমর্থনে ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে কোনো ভিডিও, ছবি, বক্তব্য আপলোড, শেয়ার, মন্তব্য এমনকি লাইক দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে যদি এ ধরনের কার্যকলাপে যুক্ত পাওয়া যায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’