1780″ src=”http://www.bengalieye.com/wp-content/uploads/2016/06/shehri” alt=”shehri” width=”400″ height=”220″ />স্বাস্থ্য ডেস্কঃ রমাদান বা রমজান শব্দের অর্থ হলো প্রচণ্ড গরম, সূর্যের খরতাপে পাথর উত্তপ্ত হওয়া, সূর্যতাপে উত্তপ্ত বালু বা মরুভূমি, মাটির তাপে পায়ে ফোসকা পড়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, ঝলসে যাওয়া, কাবাব বানানো, ঘাম ঝরানো, চর্বি গলানো, জ্বর, তাপ ইত্যাদি। রমজানে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় রোজাদারের পেটে আগুন জ্বলে; পাপতাপ পুড়ে ছাই হয়ে রোজাদার নিষ্পাপ হয়ে যায়; তাই এ মাসের নাম রমজান।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন: ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি; আশা করা যায় যে তোমরা তাকওয়া অর্জন করবে।’ (সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াত)। আল্লাহ চান তাঁর বান্দা তাঁর গুণাবলি অর্জন করে সেই গুণে গুণান্বিত হোক। আল্লাহ তাআলা কোরআন মজিদে বলেন: ‘আল্লাহর রং! আর আল্লাহর রং অপেক্ষা চমৎকার কোনো রং হতে পারে?’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৩৮)। হাদিস শরিফে আছে: ‘তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও।’ (মুসলিম)। যেহেতু মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি, তাই তাকে খেলাফতের দায়িত্ব পালনের যোগ্য হতে হলে অবশ্যই সেসব গুণাবলি অর্জন করতে হবে।
আল্লাহর রং বা গুণ কী? তা হলো আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে: ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার ৯৯টি নাম রয়েছে, যারা এগুলো আত্মস্থ করবে; তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম ও তিরমিজি)। মহান আল্লাহর নামাবলি আত্মস্থ বা ধারণ করার অর্থ হলো সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করা এবং সেসব গুণা ও বৈশিষ্ট্য নিজের কাজকর্মে, আচরণে প্রকাশ করা তথা নিজেকে সেসব গুণের আধার বা অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা। রমজান হলো তাকওয়ার প্রশিক্ষণ। লক্ষ্য হলো রমজানের বাইরের বাকি এগারো মাস রমজানের মতো পালন করার সামর্থ্য অর্জন করা, দেহকে হারাম খাদ্য গ্রহণ ও হারাম কর্ম থেকে বিরত রাখা এবং মনকে অপবিত্র চিন্তাভাবনা, হারাম কল্পনা ও পরিকল্পনা থেকে পবিত্র রাখা।
রমজান আত্মশুদ্ধি ও সংযমের মাস। এ রোজায় আমরা ধর্মীয় সওয়াবের পাশাপাশি শারীরিকভাবে বিভিন্ন উপকার পেয়ে থাকি। যেমন—ওজন কমা, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ রোগের ঝুঁকি কমা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়া।
তবে এসব উপকার পাওয়ার জন্য আদর্শ খাদ্যতালিকা অনুসারে সেহরিতে খাবার খেতে হবে আপনাকে। পাশাপাশি সেহরির পর থেকে ইফতার পর্যন্ত কিছু নিয়ম মানতে হবে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য।
সেহরির পর যে কাজগুলো করবেন না:
সেহরির পর ক্লান্ত শরীরে গাড়ি চালাবেন না
রোজাতে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র বিঘ্নিত হয়। অপর্যাপ্ত ঘুম শরীরের সমন্বয়, বিচার-বিশ্লেষণ নষ্ট করে এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে। তাই এ সময় পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ক্লান্ত লাগে। পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন এবং মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকুন। এতে সড়ক দুর্ঘটনা হতে পরে।
সেহরির পর জিমে ব্যায়াম করা যাবে না
জিমে ব্যায়াম করলে মাংসপেশি থেকে জমানো গ্লাইকোজেন খরচ হয়ে তাড়াতাড়ি শরীর ক্লান্ত হয়। এতে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
ব্যায়াম হিসেবে হাঁটাহাঁটি করা যাবে, তবে দৌড়ানো নয়
দৌড়ালে শরীরে তাপ তৈরি হয়ে ঘাম হয়। এতে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
দীর্ঘ সময় ফুটবল ও সাঁতার কাটা যাবে না
সেহরির পর দীর্ঘ সময় ফুটবল খেললে ও সাঁতার কাটলে শরীরের শক্তি তাড়াতাড়ি খরচ হয়। এতে ক্লান্ত লাগে।
বেশি গরম পরিবেশে লম্বা সময় কাজ করা যাবে না
গরমে বেশি কাজ করলে শরীরের পিএইচ (pH) পরিবর্তন হয়ে সমস্ত বিপাক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। শরীর থেকে দরকারি পানি ও ইলেকট্রোলাইট (লবণ ও মিনারেল) বের হয়ে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখে ঝাপসা, কর্মক্ষেত্রে মনোযোগ নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। এমনকি সচেতন না হলে মৃত্যুও হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা বেশি পরিশ্রমের ব্যায়াম করবেন না
ডায়াবেটিস রোগীরা বেশি পরিশ্রমের ব্যায়াম করবেন না। এতে রক্তের গ্লুকোজ কমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। রাগ করবেন না, এতে হরমোন এড্রেনালিন ও কর্টিসলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে, রক্তচাপ ও হার্টবিট বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ কমিয়ে দিতে পারে।