স্বাস্থ্য ডেস্কঃ পানির অপর নাম জীবন। পানির অপর নাম জীবন। প্রতিদিন ন্যূনতম আট গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানে না ঠাণ্ডা পানি পান করার চাইতে উষ্ণপানি পান করে কিছু অসাধারণ উপকার পাওয়া যায়। অনেকেই সকালে এক কাপ চা বা কফি পান করে দিন শুরু করেন। পানির প্রসঙ্গেও বেশিরভাগ মানুষই ঠান্ডা পানি পছন্দ করেন। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে এতে শরীরের উপকারের বদলে অপকারই হয় বেশি। ঠাণ্ডা পানি বাদ দিয়ে সকাল সকাল উষ্ণ গরম পানি পান করলে চা বা কফির মত টেস্ট বাডের ক্ষতি করেনা। নিয়মিত উষ্ণ গরম পানি পান করার বিস্ময়কর কিছু উপকারিতার কথাই জানবো আজ।
১। ওজন কমতে সাহায্য করে
আপনি কি ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমানোর কথা ভাবছেন? তাহলে আপনি গরম পানির সাহায্য নিতে পারেন। কুসুম গরম পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। যা বিপাকীয় গতি বৃদ্ধি করে। শুন্য ক্যালরির উষ্ণ গরম পানি ক্ষুধা সৃষ্টিতে বাঁধা দেয়। এভাবেই ওজন কমতে সাহায্য করে উষ্ণ গরম পানি।
২। শরীরকে ডিটক্সিফাই হতে সাহায্য করে
অনেকেই এটা জানেন না যে গরম পানি ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ মূত্র ও ঘামের মাধ্যমে বের করে দিয়ে শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে। ভালো ফল পাওয়ার জন্য উষ্ণ গরম পানির সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
৩। হজমে সাহায্য করে
উষ্ণ গরম পানি পান করলে বিশেষ করে খাওয়ার সময়, তা খাদ্য ভাঙ্গার প্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধির মাধ্যমে হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ও খনিজের ভারসাম্য রক্ষা করে। সকালে খালি পেটে উষ্ণ গরম পানি পান করলে মল নির্গমনে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
34225″ src=”http://www.bengalieye.com/wp-content/uploads/2016/08/cup-hot.gif” alt=”cup-hot” width=”670″ height=”450″ />৪। অকাল বার্ধক্য রোধ করে
শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়া ছাড়াও ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের মেরামতের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এভাবেই অল্প বয়সে চেহারার বয়সের ছাপ যেমন- বলিরেখা, ত্বকের শুষ্কতা ও কাল দাগ পড়ার মত লক্ষণগুলো কমতে সাহায্য করে গরম পানি।
৫। ব্যথা কমায়
উষ্ণ গরম পানির তাপ পেশীকে শিথিল হতে সাহায্য করে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। তাই আপনার যদি পেশীতে খিঁচুনি হওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে আক্রান্ত স্থানে গরম পানির সেঁক দিলে ব্যথা কমতে সাহায্য করবে। এটি ব্যথা ও ফোলা কমানোর একটি অতি প্রাচীন প্রতিকার।
৬। পোস্ট-ওয়ার্কআউট ড্রিংক হিসেবে চমৎকার কাজ করে
ব্যায়ামের পরে এনার্জি ড্রিংকের পরিবর্তে উষ্ণ গরম পানি পান করলে শরীরের ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ব্যালেন্স রক্ষা করে, রিহাইড্রেট করে এবং বিপাকের গতি বৃদ্ধি করে ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে।
৭। ঘুমাতে সাহায্য করে
রাতে খাওয়ার সময় বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে উষ্ণ গরম পানি পান করলে শুধু হজমেই সাহায্য করেনা বরং শরীরকে শিথিল হতে ও নার্ভকে শান্ত হতে সাহায্য করে। ফলে ভালো ঘুম হয় এবং মধ্যরাতের ক্ষুধা নিবারণেও সাহায্য করে।
৮। ব্রণ ও ত্বকের ফুসকুড়ি প্রতিরোধেঃ
উষ্ণপানি ত্বকের গভীর থেকে পরিষ্কার করে দেয় দূষিত পদার্থগুলোকে, ফলে ব্রণ ও ত্বকের ফুসকুড়ি জাতীয় নানা সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যায়।
৯ ।স্বাস্থ্যকর চুলের জীবনীশক্তিঃ
উষ্ণপানি পান নরম চকচকে স্বাস্থ্যকর চুল পেতে অসামান্য উপকারী। এটি চুলের গোরায় স্নায়ুর শক্তি ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যার কারণে উষ্ণপানি পানকে বলা যায় আপনার স্বাস্থ্যকর চুলের প্রাকৃতিক জীবনীশক্তি। এটি চুল পড়া কমিয়ে দেয় ও নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
১০ ।খুশকি প্রতিরোধ করেঃ
উষ্ণপানি মাথার ত্বককে রুক্ষ হতে দেয় না এবং এটি শুষ্ক মাথার ত্বক ও খুশকির বিরুদ্ধে কাজ করতে সাহায্য করে।
১১ ।শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার রাখেঃ
উষ্ণপানি সর্দি, কাশি ও গলদাহের জন্য চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান। উষ্ণপানি পানে শ্বাসযন্ত্রের নালীতে জমে থাকা কঠিন কফও পরিষ্কার হয়ে যায়। যা আপনাকে কফজনিত বিভিন্ন অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিবে।
এছাড়াও স্কিন ইনফেকশন হওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে, রক্ত সংবহন উন্নত করে, ত্বকের ছিদ্রগুলোকে উন্মুক্ত করার মাধ্যমে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমায় এবং পানিবাহিত রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায় উষ্ণ গরম পানি।