পুষ্টি গুণে ভরপুর লটকন

স্বাস্থ্য ডেস্কঃ কিছুদিন আগেও লটকনকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ফল মনে করা হতো না বাংলাদেশে। কিন্তু এর স্বাদ, পুষ্টিগুণ, ঔষধিগুণ ইত্যাদি প্রকাশ পাওয়ায় তা এখন শুধু অতি পরিচিত ফলই নয় বরং অতি প্রয়োজনীয় ফলে পরিচিতি লাভ করেছে। হলুদাভ ছোট ও গোলাকার এক ধরনের ফল লটকন। ইংরেজিতে লটকনকে বলা হয় বার্মিজ গ্রেপ।

লটকন উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি বেশ উপযোগী। আমাদের দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত টক-মিষ্টি স্বাদের এ লটকন। বৃহত্তর সিলেটের মানুষ লটকনকে বলে ডুবি। চট্টগ্রামে বলা হয় হাড়ফাটা। ময়মনসিংহের লোকেরা বলে কানাইজু। এ ছাড়া অনেক স্থানে লটকনকে বলা হয় লটকা, লটকাউ ইদ্যাদি।

চলুন জেনে নি লটকনের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা-

পুষ্টিগুণ :

লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে নানা ধরনের ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। অবাক বিষয় হলো এতে ক্যালরি আছে আমাদের জাতীয় ফল হিসেবে পরিচিত কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ। লটকনে ভিটামিন ‘সি’ আছে প্রচুর। সিজনের সময় প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খাওয়া মানেই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হওয়া। এ ছাড়া এ ফলে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে চর্বি, আমিষ, লৌহ এবং খনিজ পদার্থ।

17104″ src=”http://www.bengalieye.com/wp-content/uploads/2016/07/lotkon.bmp” alt=”lotkon” width=”238″ height=”197″ />উপকারিতা :

লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় সহজেই। তৃষ্ণাও নিবারণ করে।

মানসিক চাপ কমায় এ ফল।

এর গাছের ছাল ও পাতা খেলে চর্মরোগ দূর হয়।

লটকন গাছের শুকনো গুঁড়ো পাতা ডায়রিয়া বেশ দ্রুত উপশম হয়।

এর গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের পীড়া ও পুরান জ্বর নিরাময় হয়। এমনকি গনোরিয়া রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এ ফলের বীজ। তবে এ ফল বেশি মাত্রায় খাওয়া উচিত নয়। তাতে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।

সিজনের সময় প্রতি কেজি লটকন বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকায়। এ ফল মুখের রুচি বাড়ায়। লটকন শিশু ও মেয়েদের প্রিয় ফল।

ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতাও ঔষধির কাজ করে। এর পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানারকমের অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।

লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

এছাড়াও গরমে তৃষ্ণা মিটাতে লটকন খাওয়া যায়। কারণ এতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি।

Facebook
Twitter
WhatsApp